আজ রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শক্তি ফিরছে বিএনপিতে!

রাজনৈতিক প্রতিবেদক
আদালতপাড়ার রাজনীতিকে কেন্দ্র করে শক্তি ফিরে পাচ্ছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ‘ইসির বিরোধিতা করে সাধারণ আইনজীবিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তারা। এ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ও সচেতন মহলেরও রয়েছে উৎসুক দৃষ্টি। ফলে তাদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে বিএনপির আইনজীবী নেতারা।
জানা যায়, আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল গত বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এড. আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন। আর সেই থেকেই শুরু হয় হট্টগোল। ওই সভাস্থলে ব্যপক উত্তেজনা আর হৈ-চৈ সৃষ্টি হয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখে নির্বাচন কমিশনের নাম ঘোষণা না করেই সভাস্থল ত্যাগ করেন হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও তার অনুসারীরা। সেই সাথে সাধারণ আইনজীবীরাও সেখান থেকে প্রস্থান করেন। তারা বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই আখতার কমিশন বাতিলের দাবিতে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের বড় একটি অংশ। বিক্ষোভে ক্ষমতাসীন দলের আইনজীবীদের সমর্থন পাওয়াতে আদালতপাড়ায় শক্তি পূর্বের ন্যয় অনেকটা বেশি পাচ্ছে বিএনপির আইনজীবীরা। সেই সাথে তাদের এমন দাবীকে সাধারণ মানুষও গ্রহণ করে নিয়েছে বলে শোনা যায়।
নির্বাচন কমিশনের নাম ঘোষণা করার পর এর আগে আদালত পাড়ায় দুইবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপির আইনজীবীরা। গতকাল তৃতীয় বারের মতো আসন্ন জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আখতার কমিশন প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বারের সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সিনিয়র সহ সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও তার অনুসারীরা। এসময় তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ না করলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, যারা গতবার নির্বাচন করেছিলো তারা আমাদের প্রার্থীদের দৈহিকভাবে নির্যাতন করেছিল। অনেককে ভোট দিতে দেয় নাই। যে নির্বাচন কমিশন এগুলো প্রতিরোধ করতে পারে নাই সে কমিশনের আন্ডারে আমরা নির্বাচন চাই না। বহিরাগতদের দিয়ে পেশিশক্তির প্রদর্শন করানো হচ্ছে। এটা কোন দলীয় বিষয় নয়। এটি আইনজীবীদের অধিকার আদায়ের বিষয়। এই নির্বাচন কমিশন অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সকল আইনজীবীদের মতামত নিয়ে আমরা নতুন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন তৈরি করবো।
সাখাওয়াতের এমন বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেছে আদালতপাড়ায় উপস্থিত সাধারণ মানুষ। তারা জানান, এর আগেও আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের ব্যপক অভিযোগ ছিলো। যে নির্বাচন কমিশশনারের বিরুদ্ধে পূর্বে বিস্তর অভিযোগ সে কমিশনার বদলে দেয়া উচিৎ। তাছাড়া যেখানে ক্ষমতাসীন দলের আইনজীবীরাও বিরোধিতা করছে সেখানে তো আর কোন কথাই থাকে না। যদি নির্বাচন কমিশনার সুষ্ঠ হতো তাহলে তো আর ক্ষমতাসীনদের বিরোধিতা করার কথা না।
এদিকে সচেতন মহলের মতে, সকলেই চায় একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের পাশাপশি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন চায়। বারের সভাপতি নির্বাচন কমিশনের নাম ঘোষণা করার সাথে সাথেই আদালতপাড়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা শুরু থেকেই বিরোধিতা করে চলেছে। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে আওয়ামী লীগ পন্থী আইনজীবীদের একাংশ। সবমিলিয়ে যেহুতু নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে এতো হট্টগোল তৈরি হয়েছে সেহুতু এই কমিশনার বদলে দেয়া উচিৎ।